২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

পুরান ঢাকার বানর : অতীত-বর্তমান

পুরান ঢাকার বানর - ছবি : নয়া দিগন্ত

পুরান ঢাকায় বিভিন্ন জায়গায় বানরের দলকে ইট পাথরের বিল্ডিং বেয়ে কিংবা তারে ঝুলে খেলা করতে দেখা যায়। পুরান ঢাকার তাঁতিবাজার, শাখারী বাজার, লক্ষ্মীবাজার, নারিন্দা, গেন্ডারিয়ায় দেখা মেলে এসব বানরের। বিভিন্ন অলি-গলিকে নিজেদের এলাকা বানিয়ে ফেলেছে বানরের দল। তারা অনেক বছর ধরে মানুষের সাথে মিলেমিশে বসবাস করে আসছে।

তবে তারা এখন ভালো নেই। ক্রমেই বিলুপ্তির পথে পুরান ঢাকার এসব বানর। ধীরে ধীরে কমে যেতে শুরু করেছে বানরের সংখ্যা। আনুমানিক এই এলাকায় শ’খানেক বানরের বসবাস। খাবারের অভাবে ও অসুস্থতায় ক্রমশ কমে যাচ্ছে বানরের সংখ্যা। কোভিডের পর থেকে তাদের পাশে দাঁড়ানোর মতো তেমন কোনো সংগঠনের দেখা নেই। কোভিডের প্রথম দিকে সিটি করপোরেশনও বিভিন্ন সংগঠন থেকে কিছু খাবার দেয়া হলেও এখন স্থানীয় মানুষের খাবারের উপরেই নির্ভর করেই বানরগুলো বেঁচে আছে।

তাঁতিবাজার এলাকার বাসিন্দা অপূর্ব চৌধুরী জানান, ‘বানরগুলো এখন একেবারে রোগা হয়ে গেছে। এদের দেখলেই বোঝা যায়, এরা পুষ্টিহীনতায় ভুগছে। আগে বিভিন্ন সংগঠন থেকে এদের খাবার দিত, তবে এখন হঠাৎ খাবার দেয়া হয়। স্থানীয় কিছু মানুষ এদের খাবার দিলে এরা খেতে পারে।‘

তিনি আরো জানান, ‘খাবারের অভাবে এরা মাঝে মাঝেই জানালা দিয়ে খাবার চুরি করে। এছাড়া মানুষের কাপড় নিয়ে যায়। আমার বাসা থেকে একটি টি-শার্ট নিয়ে গেছে। আরেকবার ঘরে এসে কলা নিয়ে গেছে। স্থানীয় মানুষজন এদের একটু ভয় পায়। এরা মাঝে মাঝে বাচ্চাদের ভয় দেখায়, বাসা-বাড়িতে ঢুকে পড়ে।‘

বানরগুলো মানুষের সান্নিধ্য কিভাবে এলো এ ব্যাপারে পুরান ঢাকার আদি বাসিন্দা রহমান মিয়া জানান, ‘গেন্ডারিয়াতে ‘সাধনা ঔষধালয়’ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের জন্য প্রচুর গাছগাছালি লাগানো হয়। সেখানেই বানরগুলো থাকত। সেখানে একটি গুড় তৈরির কারখানা ছিল। ওই কারখানেতেই গুড় খেতে আসত বানর দল। সেখান থেকেই তারা মানুষের সান্নিধ্যে আসতে শুরু করে। ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়ে পুরান ঢাকার বিভিন্ন জায়গায়। আমাদের এখানেও তিনটি দল রয়েছে, প্রতি দলে ১০ থেকে ২০টি করে বানর আছে।এরা সবসময় একত্র থাকতে পছন্দ করে। পুরনো কোনো বিল্ডিংয়ের ছাদে এরা বসবাস করে। আমাদের এখানে সোহরাওয়ার্দী কলেজের ছাদে বানরগুলো অবস্থান করে।‘

পুরান ঢাকার এ বানরগুলো ঐতিহ্যের সাথে মিশে রয়েছে। মানুষের ডাকে খুব সহজে কাছে চলে আসে এরা। শাখারীবাজার এলাকার ফল বিক্রেতা কবির জানান, ‘আমি যখন সকালে দোকান খুলি তখন এরা আসে। এলাকার অনেকেই ফল কিনে ছুড়ে দেয়। এই ফলের আশায় ওরা আমার দোকানের আশেপাশের তার বেয়ে ঝুলে থাকে।‘

শাখারী বাজার এলাকার বাসিন্দা পরিমল দাস জানান, ‘এরা রাতে বেশি তাণ্ডব করে, একবাড়ি থেকে অন্য বাড়ির ছাদে চলাচল করে।সকালবেলায় দেখা গেলেও সারাদিন ছায়াযুক্ত স্থানে থাকে। আবার সন্ধ্যার দিকে বের হয়। মাঝে মাঝেই রাতে ওদের শব্দ ঘুম ভেঙে যায়।‘

পুরান ঢাকায় হঠাৎ কেউ নতুন এলে ইট পাথরের মাঝে থাকা এসব বানর দেখে অবাকই হন। লোকালয়ে মানুষের সাথে মিলেমিশে বাস করা এই বানরগুলো পুরান ঢাকার এক অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে স্থান পেয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement
কেএফসি এখন রাজশাহী ও কুমিল্লায় ইউক্রেনের গুপ্তহত্যার চক্রান্ত ব্যর্থ করে দেয়ার দাবি রাশিয়ার তিব্বতে বিশ্বের বৃহত্তম জলবিদ্যুৎ বাঁধ তৈরি করবে চীন মির্জাপুরে যৌথ অভিযানে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে বনভূমি উদ্ধার সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ জামায়াতের কাকরাইল মসজিদে সাদপন্থীদের কার্যক্রম বন্ধ রাখার নির্দেশ শ্রীনগরে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে যুবকের মৃত্যু ভান্ডারিয়ায় জামায়াতের কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত ট্রাকচাপায় ফায়ার ফাইটার নিহতের ঘটনায় মামলা ইরানের কাছে ৩০০ বিলিয়ন ক্ষতিপূরণ দাবি করল সিরিয়ার নতুন সরকার সচিবালয়ে আগুন : ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে ৩ মন্ত্রণালয়ের কমিটি

সকল